কাজী-নজরুল-ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলাম ফিচারড পোষ্ট
কাজী নজরুল ইসলাম
কাজী নজরুল ইসলাম
জন্ম ২৫ মে ১৮৯৯

চুরুলিয়া, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ)

মৃত্যু ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ (বয়স ৭৭)

ঢাকা, বাংলাদেশ

মৃত্যুর কারণ পিক্স ডিজিজ
সমাধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গন
জাতীয়তা ব্রিটিশ ভারতীয় (১৮৯৯-১৯৪৭)
ভারতীয় (১৯৪৭-১৯৭৬)
বাংলাদেশী (১৯৭৬)
অন্যান্য নাম দুখু মিয়া
নাগরিকত্ব
  • ব্রিটিশ ভারতীয় (১৮৯৯-১৯৪৭)
  • ভারতীয় (১৯৪৭-১৯৭২)
  • বাংলাদেশী (১৯৭২-১৯৭৬)
পেশা
  • কবি
  • ঔপন্যাসিক
  • গীতিকার
  • সুরকার
  • নাট্যকার
  • সম্পাদক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
  • চল্‌ চল্‌ চল্‌
  • বিদ্রোহী
  • নজরুলগীতি
  • অগ্নিবীণা (কাব্যগ্রন্থ)
  • বাঁধন হারা
  • ধূমকেতু
  • বিষের বাঁশি
  • গজল
আন্দোলন বাংলার নবজাগরণ
দাম্পত্য সঙ্গী
  • প্রমিলা দেবী
  • নার্গিস আসার খানম
পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৭৭)
একুশে পদক (১৯৭৬)
পদ্মভূষণ
ওয়েবসাইট nazrul-rachanabali.nltr.org

কাজী নজরুল ইসলাম:

(১৮৯৯, ২৫ মে – ১৯৭৬, ২৯ আগস্ট; বঙ্গাব্দ ১৩০৬, ১১ জ্যৈষ্ঠ –১৩৮৩, ১২ ভাদ্র) বাঙালি কবি এবং পরবর্তী সময়ে আমরা দেখে থাকি বাংলাদেশের জাতীয় কবি হিসেবে সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ছিলেন ২০শ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক, যিনি বাংলা কাব্যে অগ্রগামী ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রগতিশীল প্রণোদনার জন্য সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে এবং বাঙালি মনীষার এক তুঙ্গীয় নিদর্শন হিসাবে পরিগণিত ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – এই দুই বাংলাতেই তার কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত হয়। তার কবিতায় বিদ্রোহী দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়ার কারণে তাকে বিদ্রোহী কবি নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আমরা জানি তার কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।

বাংলা মননে ২০শ শতাব্দীর এই বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক হিসেবে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সর্বদাই সোচ্চার। প্রকৃত অর্থে তার কবিতা ও গানে এই বিদ্রোহী মনোভাবই সবচেয়ে বেশি প্রতিফলিত হয়েছে। আমরা দেখে থাকি অগ্নিবীণা হাতে তার প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তার প্রকাশ। যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনি জীবনেও – কাজেই তিনি “বিদ্রোহী কবি”, তার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে উভয় বাংলাতে প্রতি বৎসর উদযাপিত হয়ে থাকে।

কবি নজরুল ইসলাম এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা ছিল ধর্মীয়। স্থানীয় এক মসজিদে সম্মানিত মুয়াযযিন হিসেবেও কাজ করেছিলেন। কৈশোরে বিভিন্ন থিয়েটার দলের সাথে কাজ করতে যেয়ে তিনি বিভিন্ন নাটক, কবিতা, এবং সাহিত্য সর্ম্পকে সম্যক জ্ঞান লাভ করেন। তিনি কিছুদিন তৎকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। এসময় কবি নজরুল ইসলাম কলকাতাতেই থাকতেন। এসময় তিনি ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। প্রকাশ করেন বিদ্রোহী এবং ভাঙার গানের মতো কবিতা; ধূমকেতুর মতো অসাধারণ সাময়িকী। জেলে বন্দী হবার পর লিখেন রাজবন্দীর জবানবন্দী। তার এই সব সাহিত্যকর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট। ধার্মিক মুসলিম সমাজ এবং অবহেলিত ভারতীয় জনগণের সাথে তার ওতপ্রোত সম্পর্ক ছিল। তার সাহিত্যকর্মে প্রাধান্য পেয়েছে ভালোবাসা, মুক্তি এবং বিদ্রোহ। ধর্মীয় লিঙ্গভেদের বিরুদ্ধেও তিনি লিখেছেন। ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও তিনি মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিতি লাভ করেছিলেন। বাংলা কাব্যে তিনি এক নতুন ধারার জন্ম দেন। এটি হল ইসলামী সঙ্গীত তথা গজল। এর পাশাপাশি তিনি অনেক উৎকৃষ্ট শ্যামা সংগীত ও হিন্দু ভক্তিগীতিও রচনা করেন। নজরুল প্রায় ৩০০০ গান রচনা এবং অধিকাংশে সুরারোপ করেছেন যেগুলো এখন নজরুল সঙ্গীত বা “নজরুল গীতি” নামে পরিচিত এবং বিশেষ জনপ্রিয়।

জীবনের মধ্যবয়সে এসে তিনি পিক্স ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এর ফলে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একই সাথে তিনি মানসিক ভারসাম্যও হারিয়ে ফেলেন। বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালে তিনি সপরিবারে ঢাকায় আসেন। এসময় তাকে বাংলাদেশের জাতীয়তা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশেই তিনি ইহধাম ত্যাগ করেন।

পরবর্তী লেখা পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *